সংগঠনে গঠনতন্ত্র
নমো ভগবতে বাসুদেবায়ঃ
“সংগচ্ছধ্বং সংবদধ্বং সং বো মনাংসি জানতাম্।
দেবা ভাগঃ যথা পূর্বে সং জানানা উপাসতে? সমানো মন্ত্রঃ সমিতিঃ সমানী সমানাং মন সহ চিত্তমেষাম্।
সমানাং মন্ত্রমভিমন্ত্রয়ে বঃ সমানেন বো হবিষা জুহোসি?"
(ঋকবেদ ১০/১৯১/২-৩)
অর্থাৎ তোমরা সকলে একসঙ্গে চল, এক মন্ত্র উচ্চারণ কর, সমিতি গঠন করে ঐক্যবদ্ধ থাক, কখনো বিচ্ছিন্ন হয়ো না।
হে নেতা! হে পুরোধা
পাহাড়ের মত দৃঢ় ও অজেয় হও। কর্তব্য পালনে সব-সময় অবিচল থাকো । [যজুর্বেদঃ ১২.১৭] যারা সৎপথে কঠোর পরিশ্রম করেন এবং পরস্পরকে সহযোগিতা করে তাদেরকেই প্রভৃ সাহায্য করেন। [ঋকবেদঃ ৪.২৩.৭]
হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতে গঠিত হয়েছে
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম, হিন্দু ইয়ুথ ফোরাম ও হিন্দু স্টুডেন্ট ফোরাম।দেশের বিভাগ, জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরামের পাশাপাশি এর অঙ্গ সংগঠন হিন্দু ইয়ুথ ফোরাম ও হিন্দু স্টুডেন্ট ফোরামসহ অন্যান্য ফোরাম কাজ করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদে পরমেশ্বরের নির্দেশ, সকলের মন্ত্র, সংকল্প ও মন এক হউক আর এই নির্দেশকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যেই বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরামের সৃষ্টি। বহু বিভক্তির কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে, ঢুকেছে নানা অপ-সংস্কৃতি। হিন্দু জাগরণের প্রত্যয় নিয়ে, বৈদিক দর্শন ও সনাতন (হিন্দু) ধর্মের শাশ্বত বাণী ও দিক নির্দেশনা গুলোকে হৃদয়ের মাঝে প্রথিত করে, বাংলাদেশের হিন্দু সমাজে বিরাজিত সম্প্রদায়গত, উপাসনাগত, পদ্ধতিগত এবং ধর্মীয় আচার, দেশ প্রেম ও অনুষ্ঠানগত সকল মত ও পথের সকলকে এক স্রোতধারায় আনার দৃঢ়প্রত্যয়ে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম। এটি কারো পক্ষের বা বিপক্ষের কোন সংগঠন নয়। এটি সকল বিভেদ ভুলে, আত্মিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের হিন্দু সমাজের ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অধিকার আদায় ও মানবাধিকার রক্ষার সংগঠন।
যে ৭ দফা দাবি নিয়ে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে সেগুলো হচ্ছে
* হিন্দু পারিবারিক আইন ও বিবাহ আইন পরিবর্তন ও সংযোজন করা চলবে না ** জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
* হিন্দু সম্প্রদায়ের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সংখ্যালঘু বিষয়ক কমিশন গঠন করতে হবে। * সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত করতে হবে। * অর্পিত সম্পত্তি ফিরে পেতে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন করে প্রকৃত উত্তরাধিকারীকে ফেরত দিতে হবে ।
* সরকারি চাকুরিতে ২০% কোটার ব্যবস্থা করতে হবে
* দুর্গাপূজায় ৩দিন ও রথ যাত্রায় ১দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করতে হবে। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশ জাতীয় ফোরামের গঠনতন্ত্র ও সংবিধানে বর্ণিত উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে:
(ক) সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের (হিন্দু) জন্য একটি ধর্মীয় সংগঠনের উন্মেষ। (খ) সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকের জান-মাল ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষাকল্পে বাংলাদেশের শাসনতন্ত্রে বর্ণিত অধিকারের আলোকে নিশ্চয়তা বিধান
করার লক্ষে কাজ করা।
(গ) সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকের গণতান্ত্রিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ও কল্যাণ নিশ্চিত করাসহ হিন্দুদের কৃষ্টি, ধর্মীয়
স্বাধীনতা, হিন্দুত্ব ও ঐতিহ্য রক্ষা করা হচ্ছে এই সংগঠনের মূলনীতি। হিন্দুর অস্তিত্ব সংকটের এ ক্রান্তিলগ্নে সচেতন ছাত্র ও যুব সমাজ ঘরে বসে থাকতে পারে না। তাই অঙ্গ সংগঠন হিসাবে গঠন করা হয়েছে “হিন্দু স্টুডেন্ট ফোরাম ও হিন্দু ইয়ুথ ফোরাম"। সারাদেশে দাবীর প্রতি জনসমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে জনসংযোগ চলছে। জেলা পর্যায়ে হিন্দু ইয়ুথ ও হিন্দু স্টুডেন্ট ফোরামের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আপনারা যারা হিন্দুত্ববোধ ও হিন্দু রক্ষার সংগ্রামে সম্পৃক্ত হতে চান তাদেরকে হিন্দু ফোরামের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই দাবী আদায়ে বিভিন্ন কর্মসূচী দেওয়া হবে । আপনার সমর্থন, সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সুপরামর্শ হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষায় সহায়ক হবে বলে আশা করছি । সকলের কাছে এই প্রত্যাশা- হিন্দুত্ববোধ ও হিন্দুদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য রক্ষায় সকলেই সহায়ক হবেন । পৃথিবীর সকল প্রাণী সুখী হউক, নিরাময় হউক, প্রশান্তি লাভ করুক, কেউ যেন দুঃখ ভোগ না করেন। ওঁ শান্তি, শান্তি, শান্তি ।
প্রচারেঃ
কোন মন্তব্য নেই